গুরুত্ব ফুরায়নি হাবলের

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী লামীয়া বললেন

| বৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই, ২০২২ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ, অভিনন্দন। চোখ কপালে ওঠা বিজ্ঞানপ্রেমী, কিশোর-তরুণ-জ্যেষ্ঠদের হাজারো প্রশ্ন আর শত শত কৌতূহলের মধ্যে জেমস ওয়েবের যুগান্তকারী ছবির ঝলকে সবাই যখন মুগ্ধ, তখনই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ প্রকল্পে কাজ করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী লামীয়া মওলা বলছেন, হাবল এখনও গুরুত্বপূর্ণ!
২০২০ সালে ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করা লামীয়া এখন পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কাজ করছেন ইউনিভার্সিটি অফ টরোন্টোর ডানলাপ ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রেনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে। সে কাজের সুবাদেই যুক্ত হয়েছেন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ প্রকল্পে হাজার বিজ্ঞানীর দলে। খবর বিডিনিউজের।
সোমবার এক হাজার কোটি ডলারের বেশি খরচে নির্মিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের (জেডব্লিউএসটি) প্রথম ছবিগুলো প্রকাশ করেছে নাসা। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস টেলিস্কোপটি নাসার হাবল টেলিস্কোপকে প্রতিস্থাপন করবে, এমন গুঞ্জন রয়েছে বাজারে। কিন্তু বিশাল আকারের গ্যালাক্সিগুলোর বিবর্তন আর কাঠামো পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা চালানো লামিয়া বলছেন, বিষয়টি এত সরল নয়।
প্রথমত, কারিগরি গঠন বিবেচনায় নিলে টেলিস্কোপ দুটি একেবারেই ভিন্ন, পার্থক্য আছে অবস্থানেও। হাবলের আয়না আকারে ২.৪ মিটার; এর বিপরীতে ওয়েব টেলিস্কোপের আয়নার আকার ৬.৬ মিটার। অর্থাৎ, হাবলের চেয়ে ওয়েবের আলোকরশ্মি গ্রহণ করার সক্ষমতা বেশি। কিন্তু, দুটি টেলিস্কোপের মধ্যে তুলনা বিচার ঠিক যৌক্তিক নয় বলেই ফোর্বস সাময়িকীকে বলেছেন লামীয়া।
হাবল মানব চোখে দৃশ্যমান আলোক রশ্মিতেই মহাবিশ্ব দেখে। কিন্তু জেডব্লিউএসটি মূলত ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ, সাধারণ পরিস্থিতিতে আলোর তরঙ্গের যে অংশটুকু মানব চোখে দৃশ্যমান নয়, তার ভিত্তিতেই মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করছে নাসার নতুন টেলিস্কোপটি। উভয় টেলিস্কোপের মূল কাজ মহাবিশ্বের দিকে রাখা হলেও টেলিস্কোপ দুটি মহাকাশকে পর্যবেক্ষণ করছে কার্যত ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। দুই টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ থেকে আসা ডেটাতেও আছে বড় পার্থক্য।
১. হাবল পৃথিবীকে ঘিরে চক্কর দিলেও ওয়েব ঘুরবে সূর্যকে ঘিরে। ২. ওয়েবের চেয়েও বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করতে পারে হাবল। ৩. হাবল আর ওয়েবের মূল পার্থক্য দৃষ্টিভঙ্গিতে। ৪. হাবল নয়, স্পিটজারের উত্তরসূরী ওয়েব। ৫. নতুন পর্যবেক্ষণে হাবল এখনও গুরুত্বপূর্ণ।
ওয়েবের উপস্থিতি আর সক্ষমতার কারণে প্রশ্ন উঠতে পারে, হাবল কি এখনও প্রয়োজন? মওলা বলছেন ‘হ্যাঁ’। ওয়েবের মাধ্যমে নতুন অনেক কিছু খুঁজে পাব, যা আমরা আগে চিহ্নিত করিনি। আমরা হাবলের মাধ্যমে সেখানে ফেরত গিয়ে আবার দেখার চেষ্টা করব, হয়তো আরও বেশি সময় নিয়ে আরও গহীনে। হাবল গুরুত্বপূর্ণ হয়েই থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচক সুপার মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপর্যটন স্পটে দর্শনার্থীর ঢল