স্যার আজিজুল হক : শিক্ষাবিদ ও সমাজব্রতী

| রবিবার , ২০ মার্চ, ২০২২ at ৮:২২ পূর্বাহ্ণ

স্যার আজিজুল হক। অবিভক্ত বাংলার কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও লেখক। সমাজসেবায়ও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। আজিজুল হকের জন্ম ১৮৯২ সালের ২৭ নভেম্বর নদীয়ার শান্তিপুরে। আজিজুল হক ১৯০৭ সালে শান্তিপুর থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৯ ও ১৯১১ সালে যথাক্রমে এফ.এ ও বি.এ পাস করেন। এরপর তিনি ইউনিভর্সিটি ল’ কলেজে যোগ দেন এবং ১৯১৪ সালে বি.এল ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মুসলিম ইনস্টিটিউটের কর্মকাণ্ডে এবং পশ্চাৎপদ মুসলমান সম্প্রদায়ের শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যাদি বিষয়ে ইনস্টিটিউটের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মেহনতি মুসলমান কৃষকদের কল্যাণের জন্য তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় এবং শ্রম ব্যয় করেন। ১৯১২ সালে যখন তিনি একজন আইনের ছাত্র এবং মুসলিম ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক সম্পাদক ছিলেন, তখন ‘মোহামেডান এডুকেশন’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা রচনা ও প্রকাশ করেন। মুসলমান ছাত্রদের দুর্দশার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ তাঁকে এ প্রবন্ধটি লিখতে উদ্বুদ্ধ করে। পরে পাবলিক ইনস্ট্রাকশন-এর পরিচালক ডব্লিউ.ডব্লিউ হর্নেলের উৎসাহ ও সমর্থনে হিস্টরি অ্যান্ড প্রোবলেমস অব মুসলিম এডুকেশন ইন বেঙ্গল নামে বই আকারে ১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয়। পেশাগত জীবনের সূচনা আইনজীবী হিসেবে। পরবর্তীসময়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ পদে অধিষ্ঠিত থেকে সমাজ সেবায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি নদীয়া জেলা বোর্ডের ভাইস চেয়্যারম্যান, কৃষ্ণনগর মিউনিসিপ্যালিটির চেয়্যারম্যান, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার স্পিকার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইংল্যান্ডে ভারতের রাষ্ট্রদূত সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকেছেন। এছাড়া আজিজুল হক বঙ্গীয় সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এবং বাণিজ্য, শিল্প ও খাদ্য বিভাগের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন সরকারি স্কুলে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা চালু, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা সপ্তাহ পালন কর্মসূচি প্রবর্তন, প্রাথমিক শিক্ষা পরিকল্পনাকে অ্যাক্টে পরিণত করা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
স্যার আজিজুল হক রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘হিস্ট্রি অ্যান্ড প্রবলেমস অব মুসলিম এডুকেশন ইন বেঙ্গল’, ‘দ্য ম্যান বিহাইন্ড দ্য প্লাউ’, ‘দ্য সোর্ড অব দ্য ক্রিসেন্ট মুন’ উল্লেখযোগ্য। গতকাল ছিলো তার ৭৫ তম মৃত্যুবাষিকী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিউনিসিয়ার জাতীয় দিবস
পরবর্তী নিবন্ধব্রডব্যান্ডের অজস্র ক্যাবলগুলো অপসারণ করা হোক