সিরাজুদ্দীন হোসেন : প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, অকুতোভয় সাংবাদিক

| সোমবার , ১ মার্চ, ২০২১ at ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

সিরাজুদ্দীন হোসেন – শহীদ বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান ছিল নির্ভীক ও দুঃসাহসী সাংবাদিকের। বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেও তিনি খ্যাতি লাভ করেন।
সিরাজুদ্দীন হোসেনের জন্ম ১৯২৯ সালের ১মার্চ মাগুরার শালিখায়। শৈশবে পিতৃহারা সিরাজুদ্দীন ঝিকরগাছা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, যশোর মধুসূদন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। দৈনিক আজাদ-এ শিক্ষানবীস সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। পরবর্তীসময়ে একই পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে স্থায়ী হন। দেশ বিভাগের পর দৈনিক আজাদ ঢাকায় স্থানান্তরিত হলে সিরাজুদ্দীন হোসেন ঢাকায় আসেন।
কর্মজীবনে তিনি ফ্রাংকলিন পাবলিকেশন, পি.পি.আই., দৈনিক ইত্তেফাক প্রভৃতি পত্রিকায় দায়িত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে সৎ ও নির্ভীক সাংবাদিকতার পরিচয় দেন। দৈনিক ইত্তেফাকে ‘মঞ্চে নেপথ্যে’ কলামে তাঁর অকুতোভয় ক্ষুরধার লেখা সাধারণ মানুষকে স্বাধীকার চেতনা ও স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে।উদার, গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তাঁর কলম ছিল অনবদ্য অস্ত্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ঢাকাতেই ছিলেন। নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন। অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সনিষ্ঠ সংবাদ প্রেরণ করেন মুজিবনগর সরকারের কাছে। পাশাপাশি চলতে থাকে ইত্তেফাকে দুঃসাহসিক সম্পাদকীয় লেখা। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাত্র ছয় দিন আগে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এ দেশীয় দোসর আলবদর বাহিনীর কিছু সদস্য বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা অনুযায়ী সিরাজুদ্দীন হোসেনকে তাঁর চামেলীবাগের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফিরে আসেন নি।
সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে একুশে পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়। সিরাজুদ্দীন হোসেন রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে : ‘ইতিহাস কথা কও’, ‘ছোট থেকে বড়’, ‘মহিয়সী নারী’, ‘দ্য ডেইজ ডেসিসিভ’ ইত্যাদি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় মা ও শিশু হাসপাতালের মহতী উদ্যোগ