সংগ্রামটা আমার একার

ডা. শাকিলা আকতার | রবিবার , ১৪ মে, ২০২৩ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থিসিয়া) ডা. শাকিলা আকতার। জানা যাক তাঁর সংগ্রামের কাহিনী। ছোট্ট তিনটি শিশুকে ফেলে হঠাৎ করে একদিন ওপারে চলে গেলেন তাদের বাবা। আমি সদ্য পাস করা চিকিৎসক। এরকম সময়ে মাথার উপর থেকে সরে গেল ছাদ। কিন্তু দমে যাইনি। তিন মেয়েকে বড় করেছি নিজের সবটুকু উজাড় করে। সাথে লেগে ছিল নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে। এখন একজন বিসিএস পাস সরকারি চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ এনেস্থেসিওলজিস্ট। ২০০৬ সালে প্রথম সন্তানের জন্ম। প্রথম বাচ্চাকে নিয়ে এমবিবিএস পাস করি ২০০৮ সালে। পরবর্তীতে ৩য় সন্তানের যখন সাড়ে তিন বছর বয়স, বড় দুই মেয়ে, একজন পঞ্চম শ্রেণী এবং আরেকজন প্রথম শ্রেণীতে। ২০১৭ সালে আমার স্বামী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এরপরও হার মানিনি। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করি ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। কোভিডকালীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেস্থেসিয়া এং আইসিইউর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলাম। পরবর্তীতে জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেস্থিসিয়া হিসাবে পদোন্নতি পাওয়ার পর টেকনাফে যোগাযোগ করা ও কাজ করাটা সহজ ছিল না। পরবর্তীতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে যোগদানের পর আমার উদ্যোগে রাঙ্গুনিয়ায় ২০২২ সালের ৯ মার্চ প্রথম সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ওপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম শুরু হয়। এতে নিরাপদ প্রসূতি সেবা আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে যোগদানের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সার্জারি অপারেশন এবং সিজারিয়ান অপারেশনের শুরু করি। বর্তমানে আমার তিন মেয়ের বড়টা বাওয়া স্কুলে দশম শ্রেণীতে, মেঝ মেয়ে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে, ছোট মেয়ে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। ডা. শাকিলা বলেন, সবসময় মনে হত, হেরে যাওয়া যাব না। তিন সন্তানের জন্য আমাকে একজন রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমিই হব তাদের জন্য উদাহরণ। আর সবকিছুর পেছনে ছিলেন আমার মা, মায়ের হাসিমুখ। মায়েরা পাশে থাকলে সন্তান অনেক কিছু জয় করতে পারে এই পৃথিবীতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বপ্নকে বিসর্জন দেয়া যাবে না
পরবর্তী নিবন্ধট্রাক সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে বান্দরবানে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু