রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী : ‘সর্বমানবের যোগ সাধনের সেতু’

| বুধবার , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বভারতী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জেলার বোলপুরে অবস্থিত। বর্তমানে বিশ্বভারতী ভারতবর্ষের সরকার স্বীকৃত অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। পশ্চিমবঙ্গে স্থাপিত হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ন্যস্ত। ১৯১৮ সালের ২৩শে ডিসেম্বর নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। তবে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯২১ সালের ২৩শে ডিসেম্বর। আজকের এই দিনটিই বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাদিবস হিসেবে স্বীকৃত।
রবীন্দ্রনাথ বরাবরই ছিলেন প্রচলিত শিক্ষাবিধির বিপক্ষে। তিনি চাইতেন, শিক্ষার্থীদের সর্বমানবের বিরাট লোকে আর বিশ্বপ্রকৃতির উদার ক্ষেত্রে মুক্তি দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে থাকবে চিত্রকলা, সঙ্গীত – এইসবের মতো আনন্দদায়ক বিষয়। এই সংকল্প থেকেই পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত ‘শান্তিনিকেতন’-এ পিতার সানন্দ অনুমতি ও আশীর্বাদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আর এর মধ্য দিয়েই তিনি জীবনমুখী শিক্ষাব্যবস্থার যে স্বপ্ন লালন করতেন তার বাস্তব রূপ দেন। মাত্র পাঁচজন ছাত্র নিয়ে যে বিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল তা-ই পরবর্তীকালে ‘বিশ্বভারতী’তে পরিণত হয়। ১৯২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর এক সংবাৎসরিক সভায় গঠিত হয় বিশ্বভারতী পরিষদ, প্রণীত হয় একটি সংবিধান। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রজেন্দ্রনাথ শীল। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা ভাষাভাষীর শিক্ষার্থীরা বিশ্বভারতীতে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
কবিগুরুর আমন্ত্রণে বিশ্বের বহু পণ্ডিতজন বিশ্বভারতীতে পড়িয়েছেন এবং গবেষণা করেছেন। কলা ও সংগীতের পাশাপাশি পল্লী সমাজ, পল্লী উন্নয়ন, সমাজ দর্শন, শিক্ষা দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের যে গভীর চিন্তা ছিল তার সুস্পষ্ট ছাপ রয়েছে বিশ্বভারতীর পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধগভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ