মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | সোমবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের প্রেরিত রাসুল তাজেদারে মদিনা হুজুরে পাক হযরত মোহাম্মদ (দ.) ইরশাদ করেছেন, বিশ্বের সকল ধনভাণ্ডারের চাবি আমাকে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আমি এই বলে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করি, আমি একদিন ক্ষুধা নিয়ে কাটাবো এবং অন্যদিন খাবো। যখন আমার পেট ভরা থাকবে তখন আমি আল্লাহর ইবাদত করবো এবং যখন ক্ষুধায় থাকবো তখন সন্তুষ্ট মনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবো। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করাই ইসলাম ধর্মের মূল বিষয়। সিয়াম সাধনা শুকরিয়া আদায় মানুষকে করে একাগ্রচিত্ত এবং বিরত রাখে পাপাচার, ব্যভিচার, অনাচার হতে।
‘সওম’ আরবী শব্দ, বহু বচন ‘সিয়াম’ অর্থ বিরত থাকা। রমজান মাসকে বলা হয় সংযমের মাস, আত্মশুদ্ধির মাস। রমজান মাসে একজন রোজাদার মানব চরিত্রের নেতিবাচক দিকগুলোকে শুধু পুড়িয়ে দগ্ধীভূতই করে না, বরং দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য বিষয় কুপিপাসা, যৌন লালসাগুলোর উপর তার ব্যক্তি সত্ত্বার নিয়ন্ত্রণ সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ফলে মানবজীবনের অপ্রয়োজনীয় নেতিবাচক দিকগুলো হয় দূরীভূত।
মানবেতিহাসে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে মানবতা যখন পাশবিক অত্যাচারের কবলে পড়ে ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে, নৈতিক ও আত্মিক অনুভূতিগুলো যখন রিপুর তাড়নায় জর্জরিত হয়ে আত্মা যখন দলিত মথিত হয়, হৃদয় যখন লেলিহান শিখায় জ্বলে পুড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়, তখন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রেরিত নবী-রাসুল পাঠিয়ে মানুষকে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে রক্ষা করেন। মানব সমাজকে রক্ষা করতে সর্বশেষ পর্বে আল্লাহর খেলাফত নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (দ.)। খিলাফত এমন একটি কাজ যা শুধু ফেরেস্তাসূলভ অবিমিশ্র আধ্যাত্মিক দ্বারা সম্পন্ন হতে পারে না, তেমনি সম্ভব নয় নিরেট পাশব বৃত্তির দ্বারাও। তাই বছরে এমন একটি ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একদিকে যেমন অতিভোজনের জড়ত্বকে কিছুটা হ্রাস করবে, অন্যদিকে অন্তরে আধ্যাত্মিকতার সমাবেশ ঘটিয়ে জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সামর্থ অর্জন করবে। এতে সামান্য সময়ের জন্য হলেও মানুষ আল্লাহ কর্তৃক অনুমোদিত স্বভাব চরিত্রের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদশ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ানোর সিদ্ধান্ত আসছে
পরবর্তী নিবন্ধরাতে মশা, দিনেও মশা