পঙ্কজকুমার মল্লিক : এক অজেয় শিল্পী

| শুক্রবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলা সংগীতের ভুবনে পঙ্কজকুমার মল্লিক একজন যশস্বী শিল্পী। একাধারে তিনি ছিলেন গায়ক, সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং অভিনেতা।
পঙ্কজকুমার মল্লিকের জন্ম বৈষ্ণব পরিবারে, ১৯০৫ সালের ১০ মে। শৈশব থেকেই তাঁর ছিল গানের প্রতি ঝোঁক। পরিবারে নিয়তই চর্চা হতো এই শিল্পের। ছেলেবেলায় বাড়িতে আমন্ত্রিত বিখ্যাত শিল্পী দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় পঙ্কজের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম দেন।
পরবর্তী সময়ে পঙ্কজ ঠাকুর-পরিবারে দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে রবীন্দ্র সংগীত শেখেন এবং রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে বিশেষ সুখ্যাতি অর্জন করেন। রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত কবিতা ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ সহ বেশ কয়েকটি কবিতায় নিজের সুর লাগিয়ে গান গাইবার সৌভাগ্য একমাত্র পঙ্কজ মল্লিকেরই। ‘নেমেছে আজ প্রথম বাদল’ নামে তাঁর প্রথম গানের রেকর্ড বের হয় ১৯২৬ সালে কলকাতার ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে। পরবর্তীসময়ে কলম্বিয়া, হিন্দুস্থান প্রভৃতি কোম্পানি থেকে রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক সহ বিভিন্ন ধরনের গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয় পঙ্কজ মল্লিকের। সংগীত পরিচালক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি ‘দেনাপাওনা’। ‘কাশীনাথ’, ‘ভাগ্যচক্র’, ‘বড়দিদি’, ‘রাইকমল’, ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ প্রভৃতি বহু ছবি পঙ্কজ মল্লিকের সুর যোজনায় ভিন্ন অভিব্যক্তি পেয়েছে। চলচ্চিত্রে রবীন্দ্র সংগীতের ব্যবহারে পঙ্কজ মল্লিকের অবদান বিশেষভাবে স্মরণ্য।
সংগীত-অন্ত প্রাণ এই গুণী শিল্পী কলকাতা বেতারের সাথে যুক্ত ছিলেন শুরু থেকেই। বেতারে ‘সংগীত শিক্ষার আসর’টি তাঁর পরিচালনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠতো।
‘মহিষাসুরমর্দিনী’ নামে বেতারের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠানও পরিচালনা করতেন পঙ্কজ মল্লিক। সংগীতে বহুমাত্রিক অবদানের জন্য শিল্পী ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি ও ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার লাভ করেন। ‘আমার যুগ আমার গান’ নামে তাঁর একখানা গ্রন্থ রয়েছে। ১৯৭৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পঙ্কজ মল্লিক প্রয়াত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধবনখেকোদের থামান, সুন্দরবনকে ভালোবাসুন