তারাও করবে জয়

মোহাম্মদ আবদুল মালেক | বুধবার , ১০ মার্চ, ২০২১ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

এবারের নারী দিবসে প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-নেতৃত্বে নারী, কোভিড-১৯ বিশ্বে সমতাপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়া। আসলে আমাদের দেশে যখন অর্ধেকের বেশি নারী- তখন তারা যদি শিক্ষায়, চাকরিতে, ব্যবসায় এগিয়ে না আসে তাহলে দেশ এগুবে কিভাবে। আলোচনায় এবার একটা বিষয় বেশি এসেছে- তা হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরিত নারীদের নিয়ে। আসলে আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে তাদের মানুষ হিসাবে। তারাতো কোনো দোষ করেনি। যা হয়েছে তা উপরওয়ালার ইচ্ছায় হয়েছে।
বৈশাখী টেলিভিশনকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তারা প্রথা ভঙ্গ করে এই প্রথম দুই ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরিত নারীকে টিভির পর্দায় নিয়ে এসেছেন। এ দুজন হলেন-তাসনুবা আনান শিশির ও নূসরাত মৌ। প্রথম জনকে সংবাদ পাঠিকা হিসাবে, আর দ্বিতীয় জন নাটকে। এই জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই দেশের বিভিন্ন অংশে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়- কারণ এছাড়া তাদের আর কিছুই করার নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে-তারাও সক্ষম মানুষ।
এক সময় থাই এয়ারওয়েজের চট্টগ্রাম-ব্যাংকক ফ্লাইট চালু ছিল। সেই সময় থাই এয়ার আমাকে তাদের মেহমান করে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা ব্যাংকক, পাতেয়া, চিয়াংমাই, চিয়াং রাই এবং গোল্ডেন ট্রায়এঙ্গেল দেখতে গিয়েছিলাম। আসলে ১৯৯০ এর পর থাইল্যান্ড খুবই সুন্দরভাবে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগিয়েছে।
আমি প্রথম ব্যাংকক যাই ১৯৬৫ সালে চীন যাওয়ার পথে। সেই ব্যাংকক আর বর্তমান ব্যাংকক আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তখন পুরো ব্যাংকক শহরকে আমার গণিকালয় বলে মনে হয়েছিল। যাক সেকথা।
থাই এয়ার আমাদের পাতেয়ার বীচ ও শহর দেখানোর পর একটা থিয়েটারে নাটক দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল। নাটকটা ছিল থাই ভাষায়, অভিনয় ছিল খুব প্রশংসনীয়। নাটক শেষ হওয়ার পর অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। আসার সময় গাইড আমাদের জানালেন, এই অভিনেতা অভিনেত্রীরা সবাই ট্রান্সজেন্ডার বা হিজড়া। আমাদের জানানো হলো, থাই সরকার এদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বড় বড় মলে-রেস্টুরেন্টে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
কলকাতায় নিউমার্কেটের পাশে নিউ এম্পায়ার সিনেমা হলের নিচে কেএফসির একটি রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে গেলে দেখবেন, যারা আপনাকে সেবা দিচ্ছে তারা সকলে বোবা। একজন মাত্র লোক রাখা হয়েছে যে কথা বলতে পারে। এই যে বোবা লোকগুলো, তাদের কথা বলার সামর্থ্য না থাকলেও গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে সুনিপুণভাবে। কেএফসি তাদের চাকরির সুযোগ করে দিয়ে-নিজেদের সামাজিক দায়িত্ব পূরণ করেছে, কয়েকটি পরিবারকে স্বাবলম্বী করে দিয়েছে এটাও কি কম কথা।
আমাদের এখানে রেস্টুরেন্ট বা এ ধরনের ব্যবসা যারা করেন তারা এ ব্যাপারে চিন্তা করে দেখতে পারেন। তাহলে আমাদের বোবা জনগোষ্ঠীর অনেকে পরিবারের বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হতে পারবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি অফিস ও বাড়িতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা
পরবর্তী নিবন্ধকরোনা : মাস্ক পরাসহ তিনটি বিষয় মানতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান