ড. মইনুল ইসলামের কলাম

| বৃহস্পতিবার , ২৯ জুলাই, ২০২১ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

চরম দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের লোভের শিকার ঐতিহাসিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো

দেশের গৃহহীন পরিবারগুলোকে সরকারি খাস জমিতে টিনের ছাউনী-পাকাঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচিকে অনেকের কাছে ‘ঐতিহাসিক’ মনে হয়েছিল, কিন্তু এক বর্ষার বৃষ্টির আঘাতেই ঘরগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করায় যে সত্যটা ফুটে উঠেছে তাহলো দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তারের প্রেক্ষাপটে আমলাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এই নির্মাণযজ্ঞটি যে অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়বে সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুধাবন করতে পারেননি। সরকারি খাস জমিতে দুই শতক জায়গায় প্রতিটি ঘর নির্মাণে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, কিন্তু মহাদুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ-ঠিকাদারির বাস্তবতায় বরাদ্দ-অর্থের সিংহভাগই যে স্রেফ লোপাট হয়ে যাবে সে ব্যাপারটা না বোঝার কী আছে? এই পাকাঘরগুলোর দেয়াল, পিলার বা মেঝেতে স্রেফ বালির সাথে নামকাওয়াস্তে সিমেন্ট দিয়ে যে পুঁজি-লুন্ঠনের মহাযজ্ঞ চালানো হয়েছে সেটারই অকাট্য প্রমাণ ফুটে উঠেছে ধসে-পড়া ঘরের দেয়াল, পিলার এবং মেঝেগুলোতে! টেলিভিশনে দেখা গেল হাত দিয়ে টান দেওয়ার সাথে সাথে ঝুরঝুর করে মেঝের ভাঙ্‌া অংশ উঠে আসছে, দেয়াল এবং পিলার খসে পড়ছে। বালির সাথে যথাযথ অনুপাতের সিমেন্ট থাকলে এহেন দশা হওয়া অসম্ভব। দেশের প্রান্তিক অবস্থানের গৃহহীন জনগোষ্ঠী দানের-ঘরগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অজস্র শোকরিয়া জানিয়েছিল, সর্বনাশা দুর্নীতির তাণ্ডবে তাঁর সদিচ্ছা নস্যাৎ হতে দেখে তারাও নিশ্চয়ই হতবাক!
আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ‘দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স’ নীতিকে শুধুই গলাবাজির রাজনীতির বাত্‌ কা বাত্‌ হিসেবে ব্যবহার করে দুর্নীতি দমনে প্রধানমন্ত্রীর নিষ্ক্রিয়তা দেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিকে গত একযুগে এমন সর্বনাশা ও সর্বব্যাপ্ত স্তরে নিয়ে গেছে যে সাম্প্রতিক কালের সব ‘মেগা প্রজেক্ট’ সহ সকল সরকারি প্রকল্পকেই জনগণ এখন পুঁজি লুন্ঠনের মহাযজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করছে। অতএব, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো যে এক বর্ষার বৃষ্টিতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে তাতে কারো অবাক হওয়ার কারণ নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের অবশ্যম্ভাবী নিয়তি হলো প্রাক্কলিত ব্যয় প্রকৃত ব্যয়ের চাইতে অনেক বেশি নির্ধারণ সত্ত্বেও প্রকল্পের কাজ অহেতুক বিলম্বিত করে কয়েক দফায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে নেয়া, যাতে আমলা, প্রকৌশলী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং ঠিকাদাররা পারস্প্পরিক যোগসাজশে প্রকল্প থেকে পুঁজি লুন্ঠনের মওকা পেতে পারে। সেজন্যেই এদেশের প্রায় প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের ব্যয় বিশ্বের উন্নত-উন্নয়নশীল নির্বিশেষে সকল দেশের চাইতে বেশি পড়ে যাওয়াই নিয়মে পরিণত হয়েছে। আর, ঠিকাদারদের প্রায় সকলেই যেহেতু ক্ষমতাসীন দল বা জোটের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকাটাই এদেশের নিয়ম তাই উপরে উল্লিখিত পুঁজি-লুন্ঠন যজ্ঞের সবচেয়ে বড় ফায়দাভোগীও হয়তো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো ‘মেগা-প্রজেক্টে’ দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঠিকাদারী প্রদান করা সত্ত্বেও মার্জিন আত্মসাতের এই নিয়মের কোন ব্যতিক্রম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্ব-চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত–২০০১ সালে সরকারে ক্ষমতাসীন ছিল আওয়ামী লীগ, আর ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট।
২০০৭-৮ সালে সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতিবাজদেরকে ‘প্রবল ঝাঁকি’ দেওয়ায় বাংলাদেশের ভাগ্যে দুর্নীতির বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশীপ আর না জুটলেও আমাদের অবস্থান এখনো দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্নে এবং বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পনেরোটি দেশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ-পর্যায়ে স্মরণ করছি, ২০০৭-৮ সালের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লেঃ জেনারেল হাসান মসউদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন যে প্রবল গতিশীলতা অর্জন করেছিল সেজন্যে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত দুর্নীতবাজ ও পুঁজি-লুটেরা রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। দুদকের পাশাপাশি মেজর জেনারেল মতিনের নেতৃত্বাধীন অধিক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতি-বিরোধী শক্তিশালী জাতীয় কমিটিও রাজনীতিবিদ ও রাঘব বোয়াল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রবল ত্রাসের সঞ্চার করেছিল ঐ সময়; ডিজিএফআই ওটার তদন্ত পরিচালনা করার কারণে রাঘব বোয়ালরা ওটার ভয়ে তটস্থ থাকত। ঐ দু’বছরে এই দুই ধরনের দুর্নীতিবাজদেরকে যে প্রবল ঝাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল সেটা দুদকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ঐ সময়টায় দেশে প্রথমবারের মত কোন সরকারকে দুর্নীতি দমনে সত্যিকার নিষ্ঠাবান মনে হয়েছিল আমার কাছে, আমার বেশ কয়েকটি লেখায় আমি নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করেছি। দুঃখজনক হলো, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হয়েই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দুদককে অকার্যকর করার যাবতীয় প্রয়াস জোরদার করেছেন। অথচ ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত একযুগে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পালে প্রবল হাওয়া লেগেছে। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০০৯-১০ অর্থ-বছর থেকে বাড়তে বাড়তে ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে ৮.২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। করোনা-ভাইরাস মহামারির তাণ্ডবে ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থ-বছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে গেলেও তা ৫ শতাংশের ওপরে রয়ে গেছে, যেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
কিন্তু দুর্নীতি ও পুঁজি লুন্ঠনের সর্বনাশা বিস্তৃতির কারণে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির এই সাফল্যের সুফল যে সমাজের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, দুর্নীতিবাজ আমলা এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জমান সামরিক কর্মকর্তারাই একতরফা দখলে নিয়ে যাচ্ছে তারই অকাট্য প্রমাণ ফুটে উঠেছে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ আরেকটি বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জনের মাধ্যমে–ধনাঢ্য ব্যক্তি সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বার্ষিক ১৭.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করেছে বাংলাদেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ওয়েলথ এক্স’ এর প্রতিবেদন ওয়ার্ল্ড আল্‌ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৮ মোতাবেক এই পাঁচ বছরে অতি-ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক দিয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলে বিশ্বে এক নম্বর স্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশ। ঐ গবেষণা প্রতিবেদনে ত্রিশ মিলিয়ন বা তিন কোটি ডলারের (প্রায় ২৫৫ কোটি টাকা) বেশি নীট-সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিদেরকে ‘আল্‌ট্রা-হাই নেট-ওয়ার্থ’ ইন্ডিভিজুয়াল হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে, বিশ্বে মোট ২,৫৫,৮৫৫ জন ধনকুবেরের সবচেয়ে বেশি ৭৯,৫৯৫ জন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই তালিকায় দ্বিতীয় থেকে দশম অবস্থানে জাপান, গণচীন, জার্মানি, কানাডা, ফ্রান্স, হংকং, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও ইতালী। এই ২,৫৫,৮৫৫ জন ধনকুবেরের সংখ্যাবৃদ্ধির হার ছিল ১২.৯ শতাংশ, কিন্তু তাদের সম্পদবৃদ্ধির হার ছিল ১৬.৩ শতাংশ। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে ৩১.৫ ট্রিলিয়ন (মানে সাড়ে একত্রিশ লক্ষ কোটি) ডলারে। গত পাঁচ বছরে ধনকুবেরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গণচীনে ও হংকং-এ, কিন্তু ধনকুবেরের সংখ্যার প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ১৭.৩ শতাংশ বাংলাদেশে। গণচীনে ধনকুবেরের প্রবৃদ্ধির হার ১৩.৪ শতাংশ। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা ২৫৫ জন। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এদেশে যেভাবে নিজেদের আয় এবং ধন-সম্পদ লুকোনোতে বিশেষ পারদর্শিতা প্রদর্শন করে থাকে তাতে হয়তো দেশে ধনকুবেরের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে। এটি বাংলাদেশের জন্যে একটি লজ্জাজনক অর্জন। কারণ, ধনকুবেরদের সম্পদের প্রবল স্ফীতির অর্থই হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফলের সিংহভাগ দেশের ধনাঢ্যদের কাছে গিয়ে জমা হয়ে যাচ্ছে, এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ন্যায্য হিস্যা থেকে দেশের সাধারণ জনগণ বঞ্চিত হচ্ছেন ক্ষমতাসীন মহলের ভ্রান্ত নীতির কারণে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চারটি মূলনীতির মধ্যে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র পুনঃস্থাপিত হয়েছে। ২০১১ সালে পাশ হওয়া সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার সে রায়কে সংবিধানে ফিরিয়ে এনেছে। কিন্তু, পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকার এখনো ‘মুক্ত বাজার অর্থনীতির’ অহিফেনের মৌতাতে মেতে রয়েছে। ফলে, এই ন্যক্কারজনক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জনের পরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের শীর্ষ-নেতৃত্বের টনক নড়ছে না। বেশ কয়েকজন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে তাদের অতীতের কর্মকান্ডের মূল্যায়ন না করে বরং এখন দেশের অর্থনীতি পরিচালনার প্রত্যক্ষ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে! লজ্জাজনকভাবে বর্তমান সরকারের আমলে ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজম’ আরো দৃঢ়ভাবে গেড়ে বসছে অর্থনীতি ও রাজনীতিতে। দেশের বর্তমান সংসদ সদস্যদের ৬২.৭ শতাংশ ব্যবসায়ী, সরকারের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য ব্যবসায়ী।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুঁজি-পাচার নিয়ে দেশের মিডিয়ায় প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার ‘বেগম পাড়া’ এবং মালয়েশিয়ার ‘সেকেন্ড হোম’ পুঁজি পাচারের প্রতীকী গন্তব্য হিসেবে প্রবলভাবে আলোচিত হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ, দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং ভারত প্রকৃতপক্ষে এদেশের পুঁজি-পাচারের সবচেয়ে বেশি সুফলভোগী। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিপ্লবের কল্যাণে এখন এসব পুঁজি-পাচারকারীর নাম-ঠিকানা এবং হাঁড়ির খবর সংগ্রহ একেবারেই সহজ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও আগ্রহের অভাবে এ-ব্যাপারে সত্যিকারভাবে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে না। অথচ, নিচে উল্লিখিত প্রতিরোধ কার্যক্রমগুলো অবিলম্বে গ্রহণ করা যায়:
১) সরকারে চাকুরিরত যেসব সিভিল আমলা এবং সামরিক কর্মকর্তার পরিবার বিদেশে ঘরবাড়ি কিনে বসবাস করছে তাদেরকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে অবিলম্বে বরখাস্ত করে কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে তাদের অবসর-পরবর্তী সকল আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাজেয়াপ্ত করা এবং তাদের পেনশন বাতিল করা;
২) এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একইসাথে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক মামলা দায়ের করে প্রয়োজনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের কারাদন্ড নিশ্চিত করা এবং দেশে থাকা সম্পদ ক্রোক করা;
৩) যেসব ঋণখেলাপিকে তদন্তের মাধ্যমে পুঁজি-পাচারকারী সাব্যস্ত করা যাবে তাদেরকে অবিলম্বে সকল ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং একটি ‘ঋণখেলাপি ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের মাধ্যমে আপিল সুবিধা রদ করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা;
৪) এসব ঋণখেলাপি কোন ব্যাংকের মালিক কিংবা পরিচালক থাকলে অথবা তারা সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তাদেরকে ঐসব পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা; এবং
৫) কোন পুঁজি-পাচারকারী ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কোন সংগঠনের নেতৃত্ব পদে অধিষ্ঠিত থাকলে কিংবা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কোন নেতা-কর্মী পুঁজি-পাচারকারী সাব্যস্ত হলে তাকে অবিলম্বে ঐ পদ থেকে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের করা।
সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়ে আপনি ইতিহাসে যে স্থান করে নিয়েছেন সেটাকে ‘চিরস্থায়ী’ করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক প্রতিরোধ যুদ্ধেও আপনাকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমার একান্ত কামনা, আপনি এই সুযোগ হারাবেন না।
লেখক : একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল আজকাল
পরবর্তী নিবন্ধসন্দ্বীপে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল