দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস, থানা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ইসির ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সব নির্বাচনি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে ভোটকেন্দ্রের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করেছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রকাশিত চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ২০২০টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫৮টি। আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৮৫৪টি।
একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় এবার ৬২টি ভোট কেন্দ্র বেড়েছে। ভোটকক্ষের সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ১শ’। একাদশ সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ভোটার বাড়ায় এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রও বাড়ছে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে বলেন, গতকাল বুধবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে প্রকাশিত খসড়া ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ২০২০টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫৪টি। খসড়া তালিকায় কিছু সংসদীয় এলাকায় ভোট কেন্দ্র বেড়েছে। প্রকাশিত খসড়া তালিকার ওপর দাবি–আপত্তি নেওয়ার শেষ সময় ৩১ আগস্ট, দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ হবে ১১ সেপ্টেম্বর এবং ১৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটকেন্দ্রে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় সংসদীয় আসন–২৭৮ চট্টগ্রাম–১ মীরসরাই আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৭টি। গতবারের চেয়ে এবার ৩টি কেন্দ্র বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৭৯ চট্টগ্রাম–২ ফটিকছড়িতে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৪২টি। গতবারের চেয়ে ৬টি কেন্দ্র বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৮০ চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৪টি। গতবারের চেয়ে এবার ৫টি কেন্দ্রে বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৮১–চট্টগ্রাম–৪ সীতাকুণ্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ১২৫টি। গতবারের চেয়ে এবার ২৭টি ভোট কেন্দ্র বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৮১–চট্টগ্রাম–৫ হাটহাজারীতে মোট ভোট কেন্দ্র ১৪৮টি। গতবারের চেয়ে এবার ৮টি বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৮৩–চট্টগ্রাম–৬–রাউজানে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৪টি। এই আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়েনি। তবে ২৩৬টি ভোটকক্ষের সংখ্যা বেড়ে মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০৭টি।
সংসদীয় আসন–২৮৪–চট্টগ্রাম–৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে (বোয়ালখালীর শ্রীপুর ও খরণদ্বীপসহ) মোট ভোট কেন্দ্র ১০৩টি। গতবারের চেয়ে এবার ৭টি কেন্দ্র বেড়েছে।
সংসদীয় আসন–২৮৫–চট্টগ্রাম–৮ বোয়ালখালী (শ্রীপুর, খরণদ্বীপ ব্যতীত) চান্দগাঁও আংশিক (চসিকের ৩,৪,৫,৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮৪টি। এই আসনে গতবারের চেয়ে এবার ৬টি কেন্দ্র কমে গেছে। ভোটকক্ষের সংখ্যা কমেছে ২০২টি। সংসদীয় আসন–২৮৬–চট্টগ্রাম–৯ কোতোয়ালী (ওয়ার্ড ১৫ থেকে ২৩ এবং ৩১ থেকে ৩৫ পর্যন্ত) আসনে গতবারের ১৪৪টি ভোট কেন্দ্র থেকে এবার আর বাড়েনি। তবে ভোটকক্ষের সংখ্যা বেড়েছে ২৯টি। সংসদীয় আসন–২৮৭–চট্টগ্রাম–১০ (ডবলমুরিং–পাহাড়তলী–খুলশী) আসনে গতবারের চেয়ে এবার ৬টি ভোট কেন্দ্র ১৫০টি হয়েছে। ভোটকক্ষের সংখ্যাও কমেছে ১৫৬টি।
সংসদীয় আসন–২৮৮–চট্টগ্রাম–১১–বন্দর–পতেঙ্গা–সদরঘাট আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫২টি। গতবারের চেয়ে এবার ৯টি কেন্দ্র বেড়েছে।
সংসদীয় আসন–২৮৯–চট্টগ্রাম–১২ পটিয়া আসনে গতবারের চেয়ে ৫টি ভোট কেন্দ্র কমে এবার ১০৬টি ভোট কেন্দ্র দাঁড়িয়েছে। তবে ভোটকক্ষের সংখ্যা গতবারের মতো ৬৭৯টিই রয়েছে। সংসদীয় আসন–২৯০–চট্টগ্রাম–১৩ আনোয়ারা–কর্ণফুলী আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১১৮টি। গতবারের চেয়ে এবার ১২টি কেন্দ্র বেড়েছে। সংসদীয় আসন–২৯১–চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ উপজেলা ও সাতাকনিয়া উপজেলার কেওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া ইউনিয়নসহ) আসনে গতবারের চেয়ে ২টি ভোট কেন্দ্র কমে এবার ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২টি। তবে ভোটকক্ষের সংখ্যা বেড়েছে ১৯২টি।
সংসদীয় আসন–২৯২–চট্টগ্রাম–১৫ (লোহাগাড়া উপজেলা ও সাতাকনিয়া উপজেলার কেওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন ব্যতীত অন্যান্য সকল ইউনিয়ন) আসনে এবার ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৬টি। গতবারের চেয়ে এবার ৯টি কেন্দ্র বেড়েছে।
সংসদীয় আসন–২৯৩–চট্টগ্রাম–১৬ বাঁশখালী উপজেলা ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১৫টি। গতবারের চেয়ে এবার ৫টি বেড়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় মোট ভোটের সংখ্যা ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩২জন।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, ভোটকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে আগের সিংহভাগ কেন্দ্রকেই বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া নতুন কিছু কেন্দ্রও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনও ভোটকেন্দ্র নিয়ে আপত্তি থাকলে বা কোনও কেন্দ্র স্থাপনের দাবি থাকলে এ সংক্রান্ত লিখিত আবেদনও করার বিধান রয়েছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি এসব আবেদন যাচাই–বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী নভেম্বরে ঘোষণা করা হতে পারে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।