কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সাতদিনের আল্টিমেটাম

চট্টগ্রাম নদী খাল রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে

সাতদিনের আল্টিমেটাম

কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, সাত কর্মদিবসের মধ্যে কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছিলেন জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান। গত ১৮ ডিসেম্বর সেই আদেশ গ্রহণ করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। কিন্তু আদেশটি গ্রহণ করার ২০দিন অতিবাহিত হলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। বক্তারা বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পাশাপাশি উচ্চ আদালতের আদেশ এবং নদী কমিশনের চেয়ারম্যানের আদেশ অম্যান্য করার অভিযোগ মাননীয় হাই কোর্টে মামলা দাখিল করা হবে।

মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, দেশের অর্থনীতির মোট আমাদানি রপ্তানির ৯২ শতাংশ যেই নদী দিয়ে সম্পন্ন হয় সেই নদীকে তিলে তিলে হত্যার দৃশ্য নীরবে সহ্য করছে জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

চট্টগ্রাম নদী খাল রক্ষা আন্দোলনের আয়োজনে গতকাল কর্ণফুলীর তীরস্থ সদরঘাটে আয়োজিত মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেরিন ফিশারিজ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলীউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, সাংবাদিক রোকন উদ্দিন আহমেদ, ইছানগর বাংলাবাজার সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ বাবুল, মোহাম্মদ ইলিয়াস, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, নদী জীবন্ত সত্ত্বা সেটা এখন আইন। জীবন্ত সত্ত্বা বিবেচনায় দখল দূষণে কর্ণফুলী নদীর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। এই নদীর দেহ দখল করে ছিন্ন ভিন্ন করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী রক্ষায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরও এই নদীটিকে তিলে তিলে হত্যা করা হচ্ছে। যার জন্য জেলা প্রশাসক, বন্দর চেয়ারম্যান, সিডিএ চেয়ারম্যান, চসিক মেয়র ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সরাসরি দায়ী। নদী হত্যার জন্য আপনাদের আদালতের কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হবে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, কর্ণফুলী রক্ষায় ব্যর্থতার দায়ভার সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়াতে পারবে না। অচিরেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করুন। জনগণ আপনাদের স্বাগত জানাবে। নদী খেকোরা প্রশাসনের সামনে আনোয়ারা এলাকায় কর্ণফুলী দখল করে শিপ ইয়ার্ড তৈরি করেছে। আপনারা চুপ করে আছেন। জনগণের সম্পদ, দেশের সম্পদ, জীবন্ত সত্ত্বা কর্ণফুলী হত্যার দায় আপনাদের নিতে হবে।

অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী বলেন, কর্ণফুলীর নদীর কারণে বাংলাদেশকে বিশ্বের অনেক দেশ জানে। এই নদীতে স্থাপিত চট্টগ্রাম বন্দর, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, ঐতিহ্যবাহী সাম্পান এদেশের গর্বের প্রতীক। কিন্তু কর্ণফুলী দখল দূষণে অনেক স্থানে তিনশত মিটারের অধিক ছোট হয়ে গেছে। অনেক স্থানে গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসন, বন্দর, সিটি কর্পোরেশন কর্ণফুলী নদী ব্যবহার করে হাজার কোটি টাকা আয় করে। কিন্তু নদী রক্ষার ব্যাপারে তারা বরাবর ধরি মাছ না ছুঁই পানি। প্রশাসন চাইলেই এক সপ্তাহে কর্ণফুলী দখলমুক্ত করা সম্ভব। আমরা নদী কমিশনের সেই আদেশের প্রতিফলন দেখতে চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকিডনি ওয়ার্ডে বসছে আরো ১০ মেশিন
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশ-বেতের জিনিসে প্লাস্টিকের দখল