আফগানিস্তানে সেভ দ্য চিল্ডেন ও কেয়ারের কার্যক্রম স্থগিত

সব এনজিওতে নারীদের নিষিদ্ধ

| সোমবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:২৯ পূর্বাহ্ণ

আফগানিস্তানে সব এনজিওতে নারীদের নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তিনটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক এনজিও দেশটিতে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। ওই তিনটি এনজিও হচ্ছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ‘সেভ দ্য চিল্ড্রেন’, ‘কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল’ (এনআরসি)। গতকাল রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে এনজিওগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের নারী কর্মীদের ছাড়া আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারব না।’ তারা নারীদের নিজ নিজ কাজে ফেরার সুযোগ করে দেওয়ার ‘দাবিও’ জানান। খবর বিডিনিউজের।

গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর থেকে তালেবান সরকার দেশটির নারীদের একের পর এক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। গত মঙ্গলবার তারা নারীদের উচ্চশিক্ষার দুয়ার বন্ধ করে দিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। দিন কয়েক যেতে না যেতেই শনিবার তারা এনজিওতে নারীদের কাজ নিষিদ্ধ করে এবং তাদের নির্দেশনা না মানলে এনজিও’র নিবন্ধন বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। মাধ্যমিক স্কুলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ আরো আগেই বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এনজিওতে নারীদের নিষিদ্ধ করার কারণ ব্যাখ্যায় তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়, এনজিওতে কাজ করা নারীরা ঠিকঠাকমত হিজাব না পরে শরিয়া আইন লঙ্ঘন করছেন। তালেবান সরকারের অর্থমন্ত্রণালয় মুখপাত্র আব্দেল রহমান হাবিব বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে শনিবার বলেছিলেন, এ নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি অবগত করতে এনজিওগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। কেয়ার, এনআরসি ও সেভ দ্য চিল্ড্রেন এর নেতাদের পক্ষ থেকে রোববার এক বিবৃতিতে বলা হয়, যদি তাদের নারী কর্মীরা না থাকত তবে সংস্থাগুলি আগস্ট ২০২১ সাল থেকে লাখ লাখ আফগানের প্রয়োজন মেটাতে ‘যৌথভাবে পৌঁছতে পারত না’। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের এই ঘোষণার বিষয়ে স্পষ্ট করে সব কিছু জানতে পারছি, আমরা এখানে আমাদের প্রকল্পগুলোর কাজ স্থগিত করছি এবং দাবি করছি, যেন পুরুষ এবং নারী সমানভাবে আফগানিস্তানে আমাদের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক শীর্ষ কোঅর্ডিনেটর রমিজ আলাকবারভ বলেন, জাতিসংঘ তালেবানকে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ, এটা ‘পুরো মানব সমপ্রদায়ের জন্য সতর্ক সংকেত’। তিনি বিবিসিকে স্পষ্ট করেই বলেন, যদি তালেবান কর্তৃপক্ষ নারী এনজিও কর্মীদের উপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে না নেয় তবে জাতিসংঘ দেশটিতে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। রমিজ অবশ্য এও বলেছেন, তালেবান যে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে সেটার প্রকৃত অর্থ এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাছ ধরায় ব্যস্ত স্বামী সময় না পেয়ে ডিভোর্স চাইলেন স্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধইঞ্জিনিয়ার ফজল আহমদ চৌধুরীর সহধর্মিণীর ইন্তেকাল