আদি কথা

অর্ক রায় সেতু | বুধবার , ২১ অক্টোবর, ২০২০ at ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ

বিগব্যাং কিংবা মহাবিস্ফোরণের পর, পৃথিবীর মতো বেঁচে থাকার কায়দা না থাকলেও জন্ম হয়েছিল এই রকম অসংখ্য গ্রহ নক্ষত্রের। মিল্কিওয়ে থেকে শুরু করে রাতের অনাবিল আকাশে ঝাকেঝাকে প্রহ নক্ষত্রের ঝড় বয়ে যায় মানুষের মাথার ওপর। তবে সেখানে কি আমাদের মতো এমন কেউ আছে যাদের আমরা দেখতে পারছিনা! প্রাণের বিকাশ কি শুধুমাত্র আমাদের পৃথিবীতে ঘটেছিল? এমন অসংখ্য রহস্যের ঘুরপাকে পড়ে আছে পুরো বিশ্বব্রম্মান্ড। বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া অযাচিত কান্ড প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মানুষকে। এখন ফিরে যাব এমনসব দিনগুলোতে, পৃথিবীর বুকে আদি মানবের টিকে থাকার গল্প,আর একটা আত্মবিশ্বাসের লড়াইয়ে যারা টিকে থাকতে পেরেছিল, নিজেদের মানিয়ে নিয়েছিল, বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্যে। মুখোমুখি হয়েছিল ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও। পৃথিবী শুরুর কয়েকবর্ষ পেরিয়ে গেল। উত্তপ্ত পৃথিবী ক্রমাগত শান্ত হয়। প্রাণের জন্ম হওয়ার পেছনে পৃথিবী যেন তৈরি হচ্ছিল ধীরেধীরে, প্রাণের জন্ম হল, আরো একধাপ তারা এগিয়ে গেল।তবে পৃথিবীর বুকে আদি মানবের জন্ম হওয়ার আগে বিভিন্ন প্রাণীকুলের জন্ম হয়েছিল। এদের কিছু প্রাণী এখনো বেঁচে আছে। তারা সময়ের সাথে বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছিল এমনকি জল স্থলে উভয় জায়গায় নিজেদের মানিয়ে নিতে এরা সক্ষম হয়েছিল। উদাহরণ: ব্যাঙ।
আদিম মানুষগুলো দল বেঁধে ছুটছে এখান থেকে ওখানে। খাবার সংগ্রহ করছে, যেখানে শিকার সেখানে তাদের রাজত্ব। কি চমৎকার দৃশ্য ছিল তাদের মধ্যে। ছোট একটা শিকার করতে পারলে তারা ভাগাভাগি করে নিত।
হিংসা শব্দটা তাদের অভিধানে ছিলনা। তারা সবাই একসাথে লড়তো, টিকে থাকার জন্য। শুধু খাবার সংগ্রহ আর হিংস্র বন্য প্রাণী থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখত। তাদের মধ্যে গড়ে উঠলো দলনেতা আর খাবারের অংশটুকু ভাগ করে দেওয়ার জন্য নেতাকে সব সময় খাবারের একটু বেশি নিতে হত কারণ, তিনি ছিলেন দলের প্রধান। সারাদিন কিছু না করেও তিনি খাবারের একটু আধটু ভাগ করে দিতেন নিজেদের মধ্যে। ক্রমান্বয়ে তারা ভাগ হতে থাকে আর তাদের মধ্যে জন্মে উঠে পরিবার-প্রিয়জন এতোদিনে তারা শিখে গেছে কিভাবে বন্য প্রাণীদের পোষ মানাতে হয়, তারা পেয়ে গেছে চাষের জমি কিভাবে বীজ ফলাতে হয়, আয়ত্ব করেছে তারা অনেক কিছু যাকে আমরা অনন্য আবিষ্কার বলে থাকি। গঙ্গা নদীর তীরে, মিশরের নীল নদের পাড়ে তাদের সভ্যতার সূচনা হয়। চাষের জন্য জল একমাত্র উৎস ছিল তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমুদ্রতীরে জলের জন্য আভাসস্থল মনে করতো। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তারা সেখানে থাকতো তাদের জমি-জমা ফসল ফেলে কোথাও যাওয়ার কোন সুযোগ ছিলনা। এভাবে যে যতো বেশি ফসল ফলাতো সে ততো ধনী হয়ে যেত। তারা খুবই সাহসী ছিল। বজ্রপাত, ভূমিকম্প এমনকি ঝড়কেও তারা ভয় পেতো না। ভাবতো আকাশ দেবতা তাদের উপর সন্তুষ্ট নয়। আকাশ দেবতাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তারা এমনকি নিজের সন্তানদের বিসর্জন দিয়ে দিতো। সভ্যতাগুলোর ক্রমাগত বিকাশ হচ্ছে, তারা ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে তারা আজ আলাদাভাবে জীবন কাটাচ্ছে গড়ে উঠেছে তাদের মাথার উপর ছাউনি। তাদের দল ভেঙে যায়, এবার শুধু নিজেরা বাচার লড়াই। যার যতো বেশি গরু-মহিষ ছিল সে ততো ধনী। যার যতো জমি ছিল সে ঐ সময়ের রাজা। নির্দিষ্ট জাইগা জুড়ে তারা ঘর বাড়ি গড়ে তোলে, ফলে পুরো পৃথিবী আগের মতো চড়ে বেড়ানোর সুযোগ ছিলনা। স্ত্রী লোকেরা বাড়িতে ছেলেমেয়ে গরু-মহিষ পশু-পাখি নিয়ে ব্যস্ত থাকতো আর পুরুষরা শিকারের জন্য ঘুরে বেড়াতো বনবাদাড়ে। এভাবে সভ্যতাগুলোর উত্থান-পতন ঘটেছিল। পৃথিবীর বয়স বাড়ছে, সভ্যতার পালাবদলে নতুন এক বিপ্লব ঘটেছে এতদিনে। একেক সময় একেক গোষ্ঠী পৃথিবীতে পাড়ি জমিয়েছিল পৃথিবীর একেক জায়গায়, একেক স্থানে। সভ্যতাগুলো কতো বর্ষ পুরনো জিওবায়োলজিস্টরা বালি-মাটির আবরণে ঢেকে যাওয়া ধ্বংস বস্তু থেকে জানার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন তথ্যাদি আমাদের পেশ করেছে।
তোমরা যখন বড় হয়ে গাদাগাদা বই পড়বে, তখন নিশ্চয় জানবে ৪৫০ থেকে ৫০০ বছর গড়িয়ে যাওয়া বুড়ো পৃথিবীর উপাখ্যান, কিভাবে সভ্যতার পালাবদল হয়েছিল আরো অনেক কিছুর আগে পিছে লুকিয়ে থাকা মহাজাগতিক রহস্য। জানবে আমরা আধুনিক হওয়ার আগে পৃথিবীতে আরো কতো সভ্যতার আবির্ভাব ঘটেছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপশ্চিম বাকলিয়া সনাতনী ঐক্য পরিষদের সম্মাননা অনুষ্ঠান
পরবর্তী নিবন্ধশরত