খেজুরের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযানে প্রশাসন। তারপরেও কমছে না দাম। গত দুইদিনের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের খেজুরের দাম কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভিযান চালিয়ে বাজারে কখনো দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এ বছর খেজুর অনেক কম বিক্রি হয়েছে। একইসাথে খেজুরের সরবরাহেও ঘাটতি রয়েছে। যদিও সরকার রমজানের এক মাস আগে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। এতে ব্যবসায়ীদের কোনো লাভ হয়নি। কারণ এলসি (ঋণপত্র) করা থেকে পণ্য গুদামজাত পর্যন্ত দুই থেকে আড়াই মাস সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ভোক্তারা বলছেন, রমজানের এই সময়ে ব্যবসায়ীরা খেজুর বাজারে না ছেড়ে কোল্ড স্টোরেজে রেখে দিয়েছেন। এতে বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন তারা।
জানা গেছে, চলতি ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাস (জুলাই–ফেব্রুয়ারি) খেজুর আমদানি হয়েছে ৩৬ হাজার ৬৯৪ টন, ২০২২–২০২৩ অর্থবছরে খেজুর আমদানি হয়েছে ৮১ হাজার ৬৮৪ টন এবং ২০২১–২০২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ৮৮ হাজার ৬০২ টন।
গতকাল ফলমন্ডি ও খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে নাগাল ব্র্যান্ডের পাঁচ কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৬৫০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকায়, আলজেরিয়ার ডেটলাইন নাগাল ১০ কেজির প্যাকেট তিন হাজার ৩০০ টাকা, তিউনিসিয়ার টেটকো ফরিদি পাঁচ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়া সৌদি আরবের পাঁচ কেজি মাশরুখ খেজুর বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। মাশরুখ–বি ব্র্যান্ডের পাঁচ কেজির খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায়। মাশরুখ ভিআইপি বিক্রি হয়েছে পাঁচ কেজি দুই হাজার ৭০০ টাকায়। ইরানি মরিয়ম খেজুর পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৩০০ টাকা, সৌদি আরবের মাবরুর খেজুর পাঁচ কেজি ৭ হাজার ৫০০ টাকা, তিন কেজি সৌদি আজওয়া খেজুর ৫ হাজার ৫০০ টাকা, মিশরের মেদজুল খেজুর পাঁচ কেজি ৫ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা, সৌদি কুদরি খেজুর পাঁচ কেজি ১ হাজার ৯০০ টাকা, মদিনা ব্র্যান্ডের রশিদি পাঁচ কেজি এক হাজার ৩০০ টাকা এবং সৌদি জাহিদি খেজুর ১০ কেজি বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৬৫০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের খেজুর ব্যবসায়ী মেসার্স আল মদিনার স্বত্বাধিকারী এহসান উল্লাহ জাহেদী দৈনিক আজাদীকে বলেন, খেজুরের দাম ক’দিন ধরে আরো বেড়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে বাজারে খেজুরের ঘাটতি রয়েছে। তাই বাড়তি।
চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন,
খেজুরের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই। সারা বছর যা খেজুর বিক্রি হয়, তার সিংহভাগ বিক্রি হয় এই রমজান মাসে। তাই কোনো ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়ে এক বছর খেজুর বিক্রি না করে রেখে দিবেন না।